ডিজিটাল ম্যাপ চালু করলো বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের আর্থিক সেবার বিস্তারিত তথ্যভিত্তিক বিশেষ ডিজিটাল ম্যাপ চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ মাধ্যমে নির্দিষ্ট কোন এলাকায় কোন কোন ব্যাংকের শাখা, এটিএম বুথ, এজেন্ট, ক্ষুদ্রঋণ সেবাপ্রদানকারী এনজিও ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য জানতে পারবেন। শনিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান রাজধানীর মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং অ্যাকাডেমির (বিবিটিএ) মিলনায়তনে এ ম্যাপের উদ্বোধন করেন।
গ্রাহকরা ইন্টারনেটে এই ঠিকানায় ভৌগলিক তথ্য ব্যবস্থার (জিআইএস) মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় কোন কোন ব্যাংকের শাখা, এটিএম বুথ, এজেন্ট, ক্ষুদ্রঋণ সেবাপ্রদানকারী এনজিও ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য জানতে পারবেন।
পোর্টালে গিয়ে একজন গ্রাহক কোনো উপজেলায় কতোটি এধরনের সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের শাখা রয়েছে তা জানতে পারবে। সে ক্ষেত্রে তাকে প্রথমে ওয়েবপোর্টালের ‘জেলা’র ওপর ক্লিক করতে হবে।
এর পর ওই জেলার সব উপজেলার নাম আসবে। তিনি যে উপজেলা সম্পর্কে তথ্য চান সেটি ক্লিক করলে ম্যপসহ এ ধরনের সব প্রতিষ্ঠানের তথ্য পাওয়া যাবে।
ম্যাপে কোন প্রতিষ্ঠানটি কোথায় অবস্থিত, জেলা বা উপজেলা শহর থেকে তার দূরত্ব কতো তা জানা যাবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) কর্মকর্তারা এ ম্যাপ ব্যবহার করে নতুন কোনো আর্থিক সেবার অনুমোদনে বিশেষ সহায়তা পাবেন।
এ সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাসান জামান, অধ্যাপক ড. এম. এ. বাকী খলিলী, এমআরএ নির্বাহী চেয়ারম্যান খন্দকার মাজহারুল হক, ম্যাপ প্রকল্পের স্পন্সর বিল অ্যান্ড মেলিন্দা গেটস ফাউন্ডেশনের গ্রেগরি চেন উপস্থিত ছিলেন
উদ্বোধনী বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ ব্যাংক গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
আর্থিক খাতের জন্য নতুন করে যে ম্যাপের উদ্বোধন করা হলো, তা আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে বিশেষ অবদান রাখতে পারবে।
এ ম্যাপ ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এমআরএ আর্থিক সেবায় সমন্বয় করতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, এ ম্যাপ ব্যবহারে কোন অঞ্চলে আর্থিক সেবা প্রদানে জনগণের ঘনত্বের বিষয়টি বিবেচনায় আনা সম্ভব হবে।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ৫ কিলোমিটারের মধ্যে ব্যাংকের শাখা বা এজেন্ট পয়েন্ট থাকা প্রয়োজন।
এসব বিবেচনায় এনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য সরকারি এজেন্টগুলো আর্থিক সেবায় পিছিয়ে থাকা অঞ্চলে পৌঁছানোর সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে পারবে।
ড. আতিউর রহমান ডিজিটাল ম্যাপে আর্থিক সেবার তথ্য নিয়মিত আপডেট রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ব্যাংক ও মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) কর্মকর্তারা এ ম্যাপ ব্যবহার করে নতুন কোনো আর্থিক সেবার অনুমোদনে বিশেষ সহায়তা পাবেন।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা ব্যাংকের শাখা, এটিএম বুথ, এজেন্ট অথবা অন্য কোনো সেবা পয়েন্ট অনুমোদনে এ ম্যাপ ব্যবহার করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
ব্যবহারের ওপর ভিত্তি করে কোনো অঞ্চলের আর্থিক সেবার গ্রাহকের ঘনত্বও বোঝা সম্ভব হবে।
এ ঘনত্ব বিবেচনায় এনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য সরকারি সংস্থাগুলো পিছিয়ে থাকা অঞ্চলে আর্থিক সেবা পৌঁছানোর উদ্যোগ নিতে পারবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে এ মানচিত্রে বিভিন্ন ধরনের ৬৫ হাজার ৫৩৪টি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে ব্যাংক শাখা রয়েছে আট হাজার ৬৪১টি, ১১ হাজার ৪৪৬টি ক্ষুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান, দুই হাজার ৬৫টি এটিএম বুথ, তিন হাজার ৭৯টি ডাকঘর, ৩১ হাজার ৭৫৫টি মোবাইল মানি এজেন্ট এবং আট হাজার ৫৪৮টি আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
ব্যাংক বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান নতুন কোনো শাখা খুললে এই ওয়েবসাইটে তাও প্রকাশ করা হবে।
0 comments: